স্বপন রবি দাস, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় তীব্র যানজটের কারণে চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী। যানজটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে বা গন্ত্যবে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানজট নবীগঞ্জের নাগরিক জীবনের নিত্যদিনের এক অসহনীয় ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। যতই ক্ষোভ ও বিরক্তির কারণ হোক, এর হাত থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছে না। নবীগঞ্জ শহরের যানজটের কারণ শহরের প্রধান রাস্তা গুলোর বেহাল দশা, এসব যেন দেখার কেউ নেই। যান চলাচলের রাস্তার স্বল্পতা, অপরিসর রাস্তার মোড়ে মোড়ে ফুটপাত এর দোকান বসিয়ে রাস্তা দখল করে, এবং সিএনজি, মিশুক ও বাস থামিয়ে যাত্রী তোলা ও নামানো, অনিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যবস্থা, হকারদের ফুটপাত দখল ইত্যাদি ছাড়াও অনেক কারণ রয়েছে।
সচেতন মহল মনে করেন, এই সব দেখার যেন কেউ নেই? সচেতন মহলে আলোচনা সমালোচনার ঝর বইছে, যানযট নিরসনের ট্রাফিক পুলিশের কোনো ভূমিকা নেই। এতে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, বাড়ছে ভোগান্তি। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যানযট নিরসনের দায়িত্ব কার? এ সব দেখার কি কেউ নেই? ট্রাফিক পুলিশ কোথায়? এ সব যেন প্রশাসনের কর্তৃপক্ষের নজরে আসছেনা। যানজট নিরশনে ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক নিরব ভূমিকা নিয়েও সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায় নেই ট্রাফিক পুলিশের কোন তৎপরতা। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা, চাকুরীজীবি, কর্মজীবিও পেশাজীবি সহ নাগরিকদের চরম ভোগান্তিও সৃষ্টি হচ্ছে এই যানজটের কারনে। উপজেলা প্রশাসন যানজট নিরশনে উদ্যোগী ভূমিকা নেয়ার জন্য একাধিকবার আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে পৌরসভাকে তাগিদ দেয়ার পরেও পৌর কর্তৃপক্ষের নীরবতায় হতাশা দেখা দিয়েছে।
এক পথচারী এই প্রতিদিনের বার্তাকে বলেন, নবীগঞ্জ শহর এখন রাজধানীর মতো হয়ে গিয়েছে। তীব্র যানজটে করণ হচ্ছে হকাররা ফুটপাত দখল করে, এই ফুটপাতের দোকান গুলোর জন্য গাড়ি নিয়ে যাওয়াতো দূরের কথা পায়ে হেটে যাওয়া ও কষ্টকর। যানজটে আটকা পড়া এক এম্বুলেন্স চালক বলেন, রোগী নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা জামে আটকা পড়ে আছি। গাড়ির ভিতরে ‘মৃ্ত্যু্র’ সাথে পাঞ্জা লড়ছেন এক রোগী। যানজট নিরশনে এখন পর্যন্ত কোন ট্রাফিক পুলিশ দেখতে পাইনি।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ অটোরিক্সা, মিশুক টমটম, ভ্যান,ইজিবাইক, শ্রমিক সমন্বয়ে গঠিত যাহার রেজিষ্ট্রেশন নং- মৌল-৩৪/২১ নবীগঞ্জ উপজেলা শাখার মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি রুস্তম আলী বলেন, নবীগঞ্জবাসীকে যানযট নিরসনের জন্য আমাদের সংঘটনের পক্ষ থেকে ৫ জন কমিউনিটি ট্রাফিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ যদি সহযোগিতা করেন। তাহলে আশা করি অচিরেই নবীগঞ্জ শহরকে যানযট মুক্ত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ অটোরিক্সা, মিশুক টমটম, ভ্যান,ইজিবাইক, শ্রমিক সমন্বয়ে গঠিত যাহার রেজিষ্ট্রেশন নং- মৌল-৩৪/২১ মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম মিয়া প্রতিদিনের বার্তাকে বলেন, নবীগঞ্জে যানজট সৃষ্টি হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে। ফুটপাত এর দোকান বসিয়ে রাস্তা দখল করা ছাড়াও অনেক কারণ রয়েছে। আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে যানযট নিরসনের জন্য কমিউনিটি ট্রাফিক এর ব্যবস্থা করেছি। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে ছিলাম। এবং রাস্তা দখল মুক্ত করার জন্য আজ থেকে তিন বছর পূর্বে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ফুটপাত এবং রাস্তা দখল মুক্ত করেছিলেন। কিন্তু ইদানিং ও রাস্তা দখল যেই সেই আগের মত হয়ে গেছে যার ফলে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ছাব্বির আহমেদ চৌধুরী প্রতিদিনের বার্তাকে বলেন, যানযট নিরসনে বেশ কয়েক বার উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী সহ সকলের সহযোগীতায় ১ মাস ব্যাপি অভিযান চালিয়ে যানযট জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসছিলাম। তিনি আরো বলেন, একমাত্র আমার সময়ে এ রকম উদ্যোগী ভূমিকা নিয়ে ছিলাম। আমি মনে করি ড্রেনের কাজ শেষ হয়ে গেলে, এভাবে আর যানযট সৃষ্টি হবে না। আমি নবীগঞ্জ বাসীকে বলতে চাই, এই নবীগঞ্জ আমাদের আমরা সবাই এগিয়ে আসি।