রাজিবুল ইসলাম রিয়াজঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের মুরাইদ গ্রামে সাপের কামড়ে কালাম মিয়া (৩০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মৃত কালাম মিয়া কালিহাতি উপজেলার বল্লা এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে। তিনি মুরাইদ গ্রামের হযরত আলীর মেয়ে মোছা. হাজেরা বেগমের স্বামী। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন কালাম। সেখানেই বিজয় (৫) নামের এক ছেলে ও কুলসুম (৪ মাস) নামের এক কন্যা সন্তানের জনক হন তিনি। তিনি পেশায় একজন অটোভ্যানচালক হলেও সাপ সামনে পেলে সাপ ধরে খেলা দেখাতেন এবং নিজেকে সাপুরে দাবি করতেন। বেহুলা লক্ষিন্দরের গানেও সাপ নিয়ে অভিনয় করতেন তিনি।
জানা যায়, মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকালে মুরাইদ বাইদ থেকে চায়না জাল উঠাতে গিয়ে দেখতে পায় সাপ আটকে আছে। পরে সেই সাপ ধরে বাজারের ব্যাগে উঠানোর সময় সাপ কামড় দিয়েছে জানায় সে। পরে সাপ নিয়ে অটোভ্যান চালিয়ে স্থানীয় এক সাপুড়ের উদ্দেশ্যে সাগরদিঘি বাজারের দিকে রওনা দেন কালাম মিয়া। তার কিছুক্ষণ পরই অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে যায় কালাম। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের ধারণা কোনো বিষধর সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জুবায়ের আহম্মেদ ফয়সাল জানান, মুরাইদ বাইদে তার পুকুরের পাশেই জাল পেতেছিল কালাম। জাল উঠাতে গিয়ে দেখে সাপ আটকা পড়েছে। সে সাপ ধরে ব্যাগে ভরতে গেলে সাপ কামড় দেয়। তখন তিনি তারাতাড়ি ময়মনসিংহ যেতে বলেন কিন্তু নিজের জানা অপবিদ্যায় ঝাড়ফুক দিয়েই ভালো আছেন জানান এবং তার ওস্তাদের কাছে যাবেন বলে ব্যাগে সাপ নিয়ে নিজের অটোভ্যান চালিয়ে সাগরদিঘীর উদ্দেশ্য রওয়ানা হন।
লক্ষিন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সকালে জানতে পারেন মুরাইদ এলাকার কালাম নামের একব্যক্তি সাপ ধরার সময় সাপে কামড় দিয়েছে। তাকে তারাতাড়ি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন তিনি। কিছুক্ষণ পরেই খবর পান কালাম মারা গেছে।
জনসচেতনতায় তিনি আরও বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও অতি বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের জঙ্গলে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ জলাশয় এবং লোকালয়ে চলে এসেছে। আপনারা সকলেই সাবধানে চলাফেরা করবেন এবং কোনক্রমে সাপ বা অন্যান্য বিশাক্ত প্রাণী কামড় দিলে অবহেলা না করে অতিদ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিবেন।
বুধবার (১১ অক্টোবর) ১০:৪০ মিনিটে বল্লার পারিবারিক গোরস্থানে কালাম মিয়াকে কবর দেওয়া হয়েছে।